
যশোরের অন্ধকার এক রাত, যখন শহরের নীরবতা ভেঙে যায় গুলির শব্দে। শীর্ষ সন্ত্রাসী মীর সামির সাকিব সাদী (৩৫) দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন। সোমবার (১৮ মার্চ) দিবাগত রাত ১২টার দিকে মুড়িব সড়কের জয়ন্তী সোসাইটির পেছনে নিজ বাড়ির উঠোনেই তার রক্তাক্ত শরীর লুটিয়ে পড়ে।
নিহতের চাচাতো ভাই রাকিব বর্ণনা করেন সেই ভয়ঙ্কর মুহূর্তের—
“আমরা বাড়িতে ফিরছিলাম। মোটরসাইকেল উঠোনে ঢোকানোর সময় হঠাৎ পেছন থেকে সাদীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এরপরেই গুলি! আমি আতঙ্কে ইট ছুঁড়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করি, কিন্তু তারা একের পর এক ৫-৬ রাউন্ড গুলি চালায়!”
স্থানীয়রা রক্তাক্ত সাদীকে দ্রুত যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কে ছিলেন সাদী?
✔ রেলবাজারের ইজারাদার
✔ যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ম্যানসেলের প্রধান সহযোগী ও ম্যানেজার
✔ ২০১৩ সালে ছাত্রদল নেতা কবির হোসেন পলাশ হত্যার সময় দুর্ঘটনায় এক পা হারান
✔ অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধের কারণে প্রতিপক্ষের রোষানলে পড়েন
🔍 অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী জানিয়েছেন—
“নিহত সাদী ও হত্যাকারীরা— উভয় পক্ষই সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। ঘটনা তদন্ত চলছে, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।”
কেন এই হত্যাকাণ্ড?
স্থানীয়দের মতে, সন্ত্রাসী গ্যাং ‘ম্যানসেলের’ অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বলি হয়েছেন সাদী।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ও সন্ত্রাসী ম্যানসেল গা ঢাকা দেয়।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সাদীসহ কয়েকজন এলাকায় ফিরতে শুরু করেন, আর তাতেই দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছায়!
যশোরের রাজপথে সন্ত্রাসের নাম ছিল মীর সামির সাকিব সাদী।
এক পা হারিয়েও অপরাধের জগতে রাজত্ব চালিয়েছেন।
কিন্তু নিজেরই সহযোগীদের হাতে উঠোনে লুটিয়ে পড়লো তার নিথর দেহ! সন্ত্রাসের পথ রক্তেই শেষ হয়— এই হত্যাকাণ্ড তারই নির্মম উদাহরণ।