
চট্টগ্রামের আলোচিত ও তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ‘ছোট সাজ্জাদ’ অবশেষে গ্রেফতার! রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি থেকে শনিবার (১৫ মার্চ) রাতে তাকে আটক করেছে পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে ছিলেন তিনি।
গ্রেফতারের পর ছোট সাজ্জাদকে তেজগাঁও থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাকে চট্টগ্রামে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সিএমপি (চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ) সূত্র জানিয়েছে, তাকে ধরতে একটি বিশেষ দল বেশ কিছুদিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছিল। অবশেষে বসুন্ধরা সিটি থেকে তাকে আটক করা সম্ভব হয়।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের মো. জামালের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ, অক্সিজেন, চান্দগাঁও এলাকায় ‘ছোট সাজ্জাদ’ নামে পরিচিত।
তিনি বিদেশে পলাতক শিবির ক্যাডার ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
ছোট সাজ্জাদের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ **১০টির বেশি মামলা** রয়েছে। চাঁদার দাবিতে ভবনে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করাসহ নানা অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
গত বছর ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ তাকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছিল। তবে পরের মাসেই জামিনে বেরিয়ে আসে সে।
২০২৩ সালের ২১ অক্টোবর বিকেলে চান্দগাঁও থানার অদূরপাড়ায় চা পানের সময় তাহসিন নামে এক যুবককে কালো রঙের একটি গাড়িতে এসে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহতের বাবা থানায় মামলা করলে **প্রধান আসামি হিসেবে ছোট সাজ্জাদের নাম উঠে আসে।
২০২৩ সালের ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের অক্সিজেন এলাকায় ছোট সাজ্জাদকে ধরতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যান তিনি। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এ বছরের জানুয়ারিতে আরও বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে। ছোট সাজ্জাদ প্রকাশ্যে ফেসবুক লাইভে এসে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসিকে পেটানোর হুমকি দেন! এই ঘটনার পরই তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ।
অবশেষে সব দম্ভ চুরমার হয়ে গেল। পুলিশের বিশেষ অভিযানের ফাঁদে আটকা পড়লেন তিনি। এখন অপেক্ষা, তার বিরুদ্ধে থাকা গুরুতর সব অভিযোগের বিচার কীভাবে হয়!
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, এই গ্রেফতার চট্টগ্রামের অপরাধ জগতের জন্য বড় একটি ধাক্কা। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়—এর আগে একবার জামিনে মুক্তি পেয়েছিল ছোট সাজ্জাদ। এবার কি সে আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যাবে? নাকি চট্টগ্রামের জনগণ অবশেষে তার শাস্তি দেখতে পাবে?