
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পারিবারিক কলহ থেকে এক হৃদয়বিদারক ট্র্যাজেডি unfolded হয়েছে। বাবা মকবুল হোসেন মোল্লাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তারই বড় ছেলে রুবেল মোল্লার বিরুদ্ধে। তবে এই হত্যাকাণ্ডের পর পালানোর চেষ্টায় আকস্মিকভাবে প্রাণ হারান ঘাতক সন্তান রুবেল মোল্লা।
রবিবার (২৩ মার্চ) রাতে নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের চেরাগ আলী বেপারী কান্দি এলাকায় ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মকবুল হোসেন মোল্লা জীবনে দুইবার বিয়ে করেছিলেন। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন তিনি। কিন্তু এই দ্বিতীয় সংসার মেনে নিতে পারেনি তার প্রথম পক্ষের সন্তানরা। বিশেষ করে বড় ছেলে রুবেলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল।
রবিবার সন্ধ্যায় বাবার সঙ্গে রুবেলের তীব্র বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে রুবেল ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাবাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। গুরুতর আহত মকবুলকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পিতৃহত্যার পর রুবেল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তার দৌড় দীর্ঘ হয়নি। বাড়ির পাশের মাঠেই হঠাৎ পড়ে যান তিনি। পরে সেখানেই তার নিথর দেহ পাওয়া যায়। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন রুবেল।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন মোল্লা জানান, “পরিবারের দীর্ঘদিনের কলহের জেরে ছেলে তার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে বাড়ির পাশেই ছেলের মরদেহ পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, সে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে। তবে বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনার পর পুরো এলাকা স্তব্ধ। এক সময় যে রক্তের সম্পর্ক ছিল, তা মুহূর্তের ব্যবধানে ভয়ানক হত্যাযজ্ঞে পরিণত হলো। একজন বাবা পুত্রের হাতে নিহত হলেন, আর সেই পুত্রও মৃত্যুর কাছে হার মানল—এই নির্মম পরিণতি যেন একটি পরিবারে সব আলো নিভিয়ে দিল।
এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, পারিবারিক কলহ কতটা ভয়ংকর পরিণতির দিকে ঠেলে দিতে পারে। নড়িয়ার এই ট্র্যাজেডি হয়তো সময়ের সঙ্গে হারিয়ে যাবে, কিন্তু এই মৃত্যু যেন সমাজকে একবার হলেও প্রশ্ন করতে শেখায়—সম্পর্ক রক্ষা করতে না পারলে শেষ গন্তব্য কি শুধুই ধ্বংস?