
মোঃ আব্দুস সালাম, কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার।
মৌলভীবাজার জেলায় কমলগঞ্জ উপজেলা আদমপুরে আজ ২৫ অক্টোবর রোজ শনিবার দুপুর ১২ ঘটিকায়
মনিপুরী হস্তশিল্প তাঁতি,ব্যবসায়ী ও জনসাধারণ এর এক সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ভৌগোলিক নির্দেশক ( জিআই) সনদপ্রাপ্ত সিলেটের মনিপুর শাড়ির নকশা বা মোটিভ অনুকরণ করে মনিপুরী এলাকায় ফ্যাক্টরি স্থাপন এবং রংপুরের কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারিতে ফ্যাক্টরিকরন ক্ষুদ্র হস্তশিল্প মনিপুরীদের জীবিকার প্রতি হুমকি স্বরূপ এর প্রতিবাদ ও সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ভানুবিল মাঝেরগাঁও কমিউনিটি বেইজড ট্যুরিজমে।
প্রেস নোট সমূহ ভৌগলিক নির্দেশক(জিআই)সনদপ্রাপ্ত সিলেটের মণিপুরী শাড়ির নকশা বা মোটিব অনুকরণ করে মণিপুরী এলাকায় ফ্যাক্টরি স্থাপন এবং রংপুরের কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারীতে ফ্যাক্টরিকরণ ক্ষুদ্র হস্তশিল্প মণিপুরীদের জীবিকার প্রতি হুমকি স্বরূপ প্রতিবাদ,সংবাদ সম্মেলন।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ আসসালামু।আপনারা জাতীর বিবেক। আমরা বিশ্বাস করি আপনাদের লেখনী ও ছবি,ভিডিওর মাধ্যমে আমাদের আবেদন,নিবেদন তথা আমাদের প্রতিবাদ বাংলাদেশ এমনকি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে তা প্রচার ও প্রসার ঘটবে।তাই আপনাদের সম্মুখে জিআই সনদ লাভ করা মণিপুরী শাড়ি তথা মণিপুরী হস্তশিল্পকে উইভিং ফ্যাক্টরিতে তৈরী বন্ধের দাবীতে কিছু দাবীদাওয়া ও প্রতিবাদ বক্তব্য আস্থা ও বিশ্বাসের সাথে তুলে ধরছি৷ প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
আপনারা জানেন, মণিপুরি তাঁতশিল্প আমাদের সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও নারীর জীবিকার মূল ভিত্তি। আমাদের হাতে বোনা মণিপুরি শাড়ি বাংলাদেশের গর্ব এবং সম্প্রতি এটি জিআই (Geographical Indication) সনদ পেয়েছে।নিবন্ধন ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ মোতাবেক আপনাদের অবগত আছে যে,যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অনুমোদিত অঞ্চল ছাড়া অন্য কোথাও জি আই পণ্য তৈরি করে, তবে তা প্রতারণামূলক এবং আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।তা আবার মণিপুরীদের ঐতিহ্য ও লালিত মণিপুরী হস্তশিল্প শাড়ির ডিজাইন বা মোটিভ ব্যবহার করে অসাধুরা উইভিং ফ্যাক্টরিতে তৈরী করে আসছে। এই নকল শাড়ি জিআই সনদের নামে ‘সিলেটের মণিপুরী শাড়ি’নামে বিক্রি হওয়ায় তাঁতিরা ক্ষতিগ্রস্ত, গ্রাহকরা প্রতারিত, আর আমাদের সংস্কৃতি ধ্বংসের মুখে।
অত্র আদমপুর বাজার এলাকায় উইভিং ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠা লগ্নে থেকে মণিপুরী তাঁতিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কারনে নানাভাবে প্রতিবাদ করে আসছে। পাশাপাশি মণিপুরী হস্তশিল্পের ডিজাইন ও মোটিভ নকল করার কারনে সাধারণ গ্রাহকরা কোনটি আসল কোনটি নকল জাল টাকার মতো বুঝতে না পারার কারনে নানাভাবে প্রতারিত হচ্ছে। সেই সাথে হস্তশিল্পের সুনাম যেমন ক্ষুন্ন হচ্ছে তেমনি আমাদের হাজার বছরের লালিত হস্তশিল্পের ঐতিহ্য বিলুপ্তির পথে ধাবিত। তাই আজ আমাদের আজকের এই প্রতিবাদ, সংবাদ সম্মেলন।
আমরা বিনীতভাবে মণিপুরী হস্তশিল্পের সুনাম, ঐতিহ্য ও অস্তিত্ব রক্ষার দাবীতে সকলের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
সম্মানিত সাংবাদিকবৃন্দ কিছু সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা অর্জনের স্বার্থে মণিপুরীদের হাজার বছরের লালিত লগো ব্যবহার করে তাদের স্বার্থ হাসিল করে যাচ্ছে। আমাদের আদমপুর বাজার এলাকায় যে ‘মণিপুরী উইভিং ফ্যাক্টরি’তে মণিপুরী নাম ব্যবহার করে যে শাড়ি তৈরীর কারখানা রয়েছে তা সর্বপ্রথমে বন্ধের দাবি জানাই। তাছাড়া ও কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় জনৈক রুবেল আহমেদের সহযোগিতায় যে মণিপুরী শাড়ি তৈরীর উইভিং ফ্যাক্টরি সমূহ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে অনতিবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য বিনীত দাবি জানাই। সাথে সাথে বাংলাদেশের রাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী জনৈক রুবেল আহমেদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাই।
বিগত সময় থেকে মনিপুরী হস্তশিল্প তাঁতি,ব্যবসায়ী অভিযোগ পাওয়া যায় যে রুবেল গং মিলে আমাদের শত আপত্তির পরেও উইভিং ফ্যাক্টরি মণিপুরী এলাকায় প্রতিষ্ঠা করে বসে।আরো উল্লেখ্য যে রুবেল আহমেদ কুড়িগ্রাম রৌমারী সহ বেশ কিছু জায়গায় এসব নকল পন্য প্রস্তুত করে সিলেটের মণিপুরী পণ্য এবং মণিপুরীদের হাতের তৈরী নামে বাজারজাত করে আসছে।
যার কারনে মণিপুরী তাঁতিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কেউ কেউ নিঃস্ব হয়ে তাঁত কাজ ছেড়ে দিয়েছে। যা খুবই দুঃখজনক।প্রসংগত বলতেই হয় মেধাসত্ব আইন লঙ্ঘন করে মেধাপ্রচার করে এই হস্তশিল্পকে ক্রমাগত কপিয়িং করার কারনে মণিপুরী তাঁতশিল্পের ঐতিহ্যতা ও সুনাম নষ্ট হচ্ছে। ফলে আমরা আমাদের এই তাঁত শিল্পের সুনাম,ঐতিহ্য ও অস্থিত্ব রক্ষার তাগিদে আজকে সমবেত হয়েছি এবং আমাদের দাবিসমূহ সংক্ষিপ্ত আকারে পেশ করছি:
নকল শাড়ি উৎপাদন ও বিক্রির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন ও রৌমারি উপজেলার ফ্যাক্টরি সমূহ বন্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করন। রুবেল আহমেদের ‘মণিপুরী উইভিং ফ্যাক্টিরি’বন্ধ করে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা।এ বিষয়ে বাজারে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের নজরদারি বাড়াতে হবে। আসল তাঁতপণ্যের জিআই সনদের সঠিক বাস্তবায়ন করতে হবে।
তাঁতিদের প্রশিক্ষণ, ডিজাইন উন্নয়ন ও স্বল্পসুদে ঋণ সুবিধা দিতে হবে।
মৌলভীবাজার কমলগঞ্জের আদমপুর বাজারে “মণিপুরি তাঁতপণ্য সার্টিফিকেশন ও প্রদর্শনী কেন্দ্র” স্থাপন করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের বর্তমান সরকার আমাদের এই নায্য দাবীর প্রতি সহমর্মিতা এবং সহানুভুতি জানিয়ে দেশের সকল প্রান্তে অবস্থিত মণিপুরী উইভিং ফ্যাক্টরি অনতিবিলম্বে বন্ধ করে হাজার হাজার ক্ষুধার্ত ও নিঃস্ব তাঁতিদের অসহায়ত্ব দূর করবেন এবং মণিপুরী জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্য ও অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে বিনীত আবেদন জানাই৷ প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা,আপনারাই পারেন এই বার্তা দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে।আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের পরিশ্রম—এই ঐতিহ্য রক্ষায় আপনাদের সহযোগিতা চাই।আমরা বিনীতভাবে অনুরোধ করছি আপনারা আমাদের এই ন্যায্য দাবি ও সংকটের বাস্তব চিত্র সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরুন। যাতে সরকার ও প্রশাসন দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়।পরিশষে মণিপুরি তাঁতশিল্প বাংলাদেশের লোকজ ঐতিহ্যের অংশ।এই ঐতিহ্য রক্ষা করার দাবি











