বড়লেখা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:
বড়লেখার আজিমগঞ্জ সরকারি প্রাইমারি স্কুল ভবনের কলাপসেবল গেটে ঝুলন্ত অবস্থায় শনিবার সকালে ইমরান আহমদ (২৩) নামে এক তরুণের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি সুজানগর ইউনিয়নের দক্ষিণ সুজানগর গ্রামের খলিল উদ্দিনের দ্বিতীয় ছেলে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজমল হোসেন ও থানার ওসি মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা। েনিহতের বাবার দাবি ইমরান আহমদ আত্মহত্যা করেছে। তবে, কী কারণে আত্মহত্যা করেছে তা নিশ্চিত নন। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরীর পর পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য নিহতের লাশ মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। এদিকে তরুণের ঝুলন্ত লাশের পারিপার্শিক অবস্থা ও নিজের ফেসবুক আইডিতে আত্মহত্যা করার একটি স্ট্রেটাসে এই মৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা রহস্য দেখা দিয়েছে।
নিহতের বাবা, থানা পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল সাতটার দিকে পার্শ্ববর্তী ছিদ্দেক আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী পারভেজ আহমদ আজিমগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের প্রবেশের কলাপসেবল গেটে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ ঝুলে থাকতে দেখে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্রতিবেশিদের খবর দেন। পরে নিহতের বাবা খলিল উদ্দিন ও হাসান আহমদ ঝুলন্ত লাশ ইমরান আহমদের বলে শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহতের বাবা খলিল উদ্দিন জানান, তার ছেলে ইমরান আহমদ রাত তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার দিকে একটি গামছা ও একটি টর্চলাইট হাতে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। মোবাইল ফোনও বাড়িতে রেখে যায়। সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলের লাশ শনাক্ত করেন। তার দাবি ইমরান আহমদ আত্মহত্যা করেছে এবং যাওয়ার আগে তার ফেসবুক আইডিতে এর ইঙ্গিত দিয়ে স্টেটাস দিয়েছে। এমডি ইমরান মাহমুদ সাহরিয়া নামক ফেসবুক আইডিতে ইমরান আহমদ লিখেছে, ‘কারো সাথে কোনো ভুল করলে মাফ করবেন। কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে মাফ করবেন। অনেকের কাছে ঋণি আছি, আমার বাবার সাথে যোগাযোগ করে নিয়ে নিবেন। না হলে মাফ করবেন তা-ও না হলে হিসাবের দিন দিয়ে দিব ওইখানে, নিয়ে নিবেন। আমার মৃত্যুটা আমার ভুলের কারণে। কাউকে কোনো দোষী বানাবো না। শুধু এটাই বলবো প্রিয়জনের অবহেলায় আর পরিবারের অবহেলায় আজ আমি নাই পৃথিবীতে।’
নিহতের ফেসবুক প্রোফাইল পর্যালোচনায় দেখা যায়, মৃত্যুর ইঙ্গিত সম্বলিত স্টেটাসটি পোষ্ট হয় ভোর সাড়ে চারটার দিকে। নিহতের বাবা খলিল উদ্দিনের দাবি রাত তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার দিকে মোবাইল ফোন ঘরে রেখে সে বেরিয়ে যায়। এর প্রায় একঘন্টা পর এই স্টেটাস পোষ্টে ধু¤্রজাল রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ঝুলন্ত লাশের পারিপার্শ্বিক অবস্থাও মৃত্যুর কারণ নিয়ে নানামূখি জল্পনা ও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই রতন কুমার হালদার জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন জব্দ করেছে পুলিশ। ফেসবুকে পোষ্ট করা স্টেটাসটি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শেখ সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী, মোবাইলঃ 01712-823054
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।