
আশরাফুল ইসলাম জুয়েল
রেলওয়ের বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ তুলে আট দফা দাবিতে কুলাউড়া জংশন স্টেশনের প্লাটফরমে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে ‘৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন আন্দোলন’ ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বক্তারা বলেন, সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-কক্সবাজার রেলপথে দুটি নতুন ট্রেন চালুসহ আট দফা দাবি না মানলে রেলপথ অবরোধ ও ট্রেন আটকে সিলেটের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আট দফা দাবি হলো—
১) সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-কক্সবাজার রেলপথে দুটি নতুন ট্রেন চালু,
২) সিলেট-আখাউড়া সেকশনের রেলপথ সংস্কার করে ডুয়েলগেজে উন্নীত করা,
৩) সিলেট-আখাউড়া লোকাল ট্রেন চালু,
৪) সিলেট অঞ্চলে বন্ধ হয়ে যাওয়া রেলস্টেশনগুলো চালু,
৫) কুলাউড়া স্টেশনে টিকিট বরাদ্দ বাড়ানো,
৬) সিলেট থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর কালনী ও পারাবত এক্সপ্রেসের আজমপুর স্টেশন-পরবর্তী যাত্রাবিরতি বন্ধ,
৭) সব ট্রেনে নতুন ইঞ্জিন সংযোজন এবং
৮) যাত্রী অনুপাতে অতিরিক্ত বগি সংযোজন।
৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন আন্দোলনের সমন্বয়ক ও প্রেস ক্লাব কুলাউড়ার সভাপতি আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল বারী সোহেলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে একাত্মতা পোষণ করে বক্তব্য দেন—কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জয়নাল আবেদীন বাচ্চু, বহির্বিশ্ব জাতীয়তাবাদী ফোরামের সভাপতি সাইফুল আলম চৌধুরী, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মো. জাকির হোসেন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল জলিল জামাল, জামায়াত নেতা রাজানুর রহিম ইফতেখার, আট দফা দাবি আন্দোলনের সমন্বয়ক আতিকুর রহমান আখই, অ্যান্টিকরাপশন সোসাইটি সিলেটের চেয়ারম্যান আনম জামান চোধুরী, সিলেটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন, পৌর জামায়াতের সভাপতি মো. রুহুল আমিন রইয়ব, বরমচাল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইছহাক চৌধুরী ইমরান, প্রেস ক্লাব সেক্রেটারি খালেদ পারভেজ বক্স, সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি মোক্তাদির হোসেন, জুড়ী উপজেলার সাংবাদিক কল্যাণ প্রসুন চম্পু, বিএনপি নেতা সুরমান আহমদ, কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আলমাস পারভেজ তালুকদার, ক্রীড়া সংগঠক আব্দুল কাইয়ুম মিন্টু, সমাজকর্মী আব্দুস শুকুর ছুরকুম, সংবাদকর্মী তাজুল ইসলাম, এইচ ডি রুবেল, ইউছুফ আহমদ ইমন, ছাত্রদল নেতা শামীম আহমদ, যুব সংগঠক শেখ সুমন, আজগর আলী ও আব্দুল মজিদ প্রমুখ।
সমাবেশে আন্দোলনকারীরা আরো এক মাসের সময় দিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে—সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রচারপত্র বিলি ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্টেশনে রেলযাত্রীদের সাথে মতবিনিময়, ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে মতবিনিময় এবং ২৭ সেপ্টেম্বর কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন প্লাটফর্মে গণঅনশন।
এছাড়া অক্টোবর মাসের শুরুতে ৮ দফা দাবি আদায় না হলে রেলপথ অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এর আগে একই দাবিতে গত ১১ আগস্ট রেল উপদেষ্টা, রেলসচিবসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এছাড়া ৯ আগস্ট কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে মানববন্ধন, ১৬ আগস্ট সিলেট রেলস্টেশনে মানববন্ধন এবং ২৩ আগস্ট শ্রীমঙ্গল স্টেশনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
বক্তারা বলেন, সিলেট দীর্ঘদিন ধরে রেল যোগাযোগে বৈষম্যের শিকার। ব্রিটিশ আমলে রেল যোগাযোগ গড়ে উঠলেও বর্তমানে এ অঞ্চলের ট্রেনগুলোর ইঞ্জিন ও বগির অবস্থা নাজুক। পথে প্রায়ই ইঞ্জিন নষ্ট হয়, বেশ কিছু স্টেশন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
তাদের দাবি, এ ৮ দফা শুধু আন্দোলনকারীদের নয়, বরং পুরো সিলেটবাসীর ন্যায্য দাবি।