
রাজধানী ঢাকা—যেখানে রাত পেরিয়ে ভোর আসে নতুন আশার বার্তা নিয়ে। কিন্তু সেই ভোর যদি বয়ে আনে আতঙ্ক, তবে শহরের বুকেও ভয় জমে থাকে। ঠিক এমনই এক ভয়ানক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে রাজধানীর পশ্চিম শেওড়াপাড়া।
ইস্ট ওয়েস্ট স্কুলের পাশের সরু গলিতে, সকালের প্রথম আলো ফোটার আগেই এক তরুণীর জীবনে নেমে আসে ভয়াল এক দুঃস্বপ্ন। চাপাতি ঠেকিয়ে তার গলার অলঙ্কার আর হাতের ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় তিন দুষ্কৃতকারী। পুরো ঘটনাটি ধরা পড়ে আশেপাশের একটি সিসিটিভি ক্যামেরায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়, আর দেশের হাজারো মানুষের চোখে জল এনে দেয় সেই দৃশ্য।
এই ঘটনার ভিত্তিতে পুলিশ শুরু করে অভিযান। ভিডিও বিশ্লেষণ করে শনাক্ত করা হয় এক যুবককে—ইমরান খান সাকিব ওরফে শাকিল (৩৫)। তার চোখে মুখে কোনো অনুশোচনা ছিল না, ছিল কেবল পালিয়ে বাঁচার ছটফটানি। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ভোরে গাজীপুরের পুবাইল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে মিরপুর থানা পুলিশ।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ রোমন জানান, “সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যায় শাকিল কীভাবে তরুণীর মুখোমুখি হয়। আমরা তাকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করেছি। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি মোটরসাইকেল এবং নগদ টাকা।”
এই ঘটনাটি শুধুই একটি সাধারণ ছিনতাই নয়, বরং তা হয়ে উঠেছে রাজধানীবাসীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নের প্রতীক। দিনে দিনে বেড়ে চলা সন্ত্রাস, ছিনতাই আর ভয়—এই শহরে মানুষ কবে আবার নিঃশ্বাস নিতে পারবে নিশ্চিন্তে?
অভিযুক্ত শাকিল ধরা পড়লেও এখনও পলাতক রয়েছে তার দুই সহযোগী। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
পথের গলিতে কেউ নিরাপদ নয়—এই বাস্তবতা মনে করিয়ে দিয়েছে শেওড়াপাড়ার সেই ঘটনা। আমরা আশাবাদী, অপরাধীদের দ্রুত বিচার হবে, এবং ভুক্তভোগী তরুণীকে সমাজ ও রাষ্ট্র পাশে দাঁড়িয়ে সাহস জোগাবে।
এই শহর একদিন নিশ্চিন্ত হবে, পথ হবে নিরাপদ। কিন্তু তার আগে, প্রতিটি ঘটনায় চাই আমাদের সজাগ দৃষ্টি, এবং অপরাধের বিরুদ্ধে একসাথে গর্জে ওঠার মনোবল।