Dhaka , মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ২১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুলাউড়ায় সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতির চেষ্টা – আটক ১ চা বাগান শ্রমিক সর্দার হত্যার নেপথ্যে চাঞ্চল্যকর ঘটনা ভাটেরা আল মদিনা সুন্নি পরিষদের উদ্যোগে বার্ষিক মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত আদমপুর ইউনাইটেড কলেজ বাস্তবায়নের সুধী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। আদমপুর ইউনাইটেড কলেজ বাস্তবায়নের সুধী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। কমলগঞ্জে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি উদ্বোধন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে কুমারী পুজা অনুষ্ঠিত কুলাউড়ায় বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস এর দাওয়াতী মজলিস অনুষ্ঠিত কুলাউড়ায় বালু উত্তোলনে চুক্তি ভঙ্গ, ইজারাদারকে এক লাখ টাকা জরিমানা  কুলাউড়ায় সোসাইটি অব জাতীয় গণমাধ্যম কমিশনের নেতৃবৃন্দকে সংবর্ধনা 

বিয়ে করতে দেশে এসেই প্রাণ হারালেন লন্ডন প্রবাসী

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • ১৬৯ Time View

বিয়ে করতে দেশে এসেই প্রাণ হারালেন লন্ডন প্রবাসী

 

প্রিয়জনের মুখে হাসি ফোটাতে, জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করতে—দীর্ঘ সাত বছর পর লন্ডন থেকে দেশে ফিরেছিলেন মোস্তাক মোল্লা (৩৫)।
চোখে ছিল বিয়ের স্বপ্ন, হাতে ছিল প্রিয়জনের জন্য আনা উপহার। বাবা-মা অপেক্ষা করছিলেন ছেলের পছন্দের পাত্রী দেখে ঘর সাজানোর জন্য। কিন্তু সব আশার আগুন নিভে গেল এক ঝলকেই—একটি সড়ক দুর্ঘটনায়।

 

গত ৯ এপ্রিল মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান মোস্তাক মোল্লা। কিশোরগঞ্জের ঘাইটাল এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অটোরিকশার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় তার। সেখান থেকে আহত অবস্থায় কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে, সেখান থেকে ময়মনসিংহে রেফার করা হয়। কিন্তু পথেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মোস্তাক।

 

পরিবারের সাত ভাইয়ের মধ্যে মোস্তাক ছিলেন বড়। অনার্স-মাস্টার্স করার জন্য লন্ডনে গিয়ে সেখানে একটি রেস্টুরেন্টে ম্যানেজারের চাকরি পান এবং পরে সে দেশের নাগরিকত্বও লাভ করেন। মোস্তাকের আরেক ভাই জার্মান প্রবাসী। দুজনে মিলে গড়ে তুলেছিলেন এই চাকচিক্যময় বাড়ি। তবে সেই বাড়িতে আর থাকা হলো না তার। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে যেন পুরো পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। পুরো এলাকা শোকে স্তব্ধ।

 

তার মা বারবার বলছেন, “ছেলেটা শুধু বিয়ে করতে এসেছিল, আর ফিরল কাফনের কাপড়ে মোড়ানো হয়ে।” এ যেন এক অসহনীয় দৃশ্য। তার শোবার ঘর সাজানো ছিল নতুন পোশাকে, নতুন জীবনের স্বপ্নে—কিন্তু সেখানে আজ শোকের ভার।

 

গ্রামের মানুষ স্তব্ধ, কেউ কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না। তারা বলছেন, “বিদেশে থেকেও দেশের জন্য কিছু করার স্বপ্ন দেখত ও।”

 

একটি প্রাণ, একটি পরিবার, একটি স্বপ্ন—সব শেষ হয়ে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায়। সড়কে আরও একটি তাজা প্রাণ ঝরে গেল, রেখে গেল প্রশ্ন—এই মৃত্যুগুলো কি আর আমাদের নাড়া দেবে না?

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

কুলাউড়ায় সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতির চেষ্টা – আটক ১

বিয়ে করতে দেশে এসেই প্রাণ হারালেন লন্ডন প্রবাসী

Update Time : ০৭:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

 

প্রিয়জনের মুখে হাসি ফোটাতে, জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করতে—দীর্ঘ সাত বছর পর লন্ডন থেকে দেশে ফিরেছিলেন মোস্তাক মোল্লা (৩৫)।
চোখে ছিল বিয়ের স্বপ্ন, হাতে ছিল প্রিয়জনের জন্য আনা উপহার। বাবা-মা অপেক্ষা করছিলেন ছেলের পছন্দের পাত্রী দেখে ঘর সাজানোর জন্য। কিন্তু সব আশার আগুন নিভে গেল এক ঝলকেই—একটি সড়ক দুর্ঘটনায়।

 

গত ৯ এপ্রিল মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান মোস্তাক মোল্লা। কিশোরগঞ্জের ঘাইটাল এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অটোরিকশার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় তার। সেখান থেকে আহত অবস্থায় কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে, সেখান থেকে ময়মনসিংহে রেফার করা হয়। কিন্তু পথেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মোস্তাক।

 

পরিবারের সাত ভাইয়ের মধ্যে মোস্তাক ছিলেন বড়। অনার্স-মাস্টার্স করার জন্য লন্ডনে গিয়ে সেখানে একটি রেস্টুরেন্টে ম্যানেজারের চাকরি পান এবং পরে সে দেশের নাগরিকত্বও লাভ করেন। মোস্তাকের আরেক ভাই জার্মান প্রবাসী। দুজনে মিলে গড়ে তুলেছিলেন এই চাকচিক্যময় বাড়ি। তবে সেই বাড়িতে আর থাকা হলো না তার। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে যেন পুরো পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। পুরো এলাকা শোকে স্তব্ধ।

 

তার মা বারবার বলছেন, “ছেলেটা শুধু বিয়ে করতে এসেছিল, আর ফিরল কাফনের কাপড়ে মোড়ানো হয়ে।” এ যেন এক অসহনীয় দৃশ্য। তার শোবার ঘর সাজানো ছিল নতুন পোশাকে, নতুন জীবনের স্বপ্নে—কিন্তু সেখানে আজ শোকের ভার।

 

গ্রামের মানুষ স্তব্ধ, কেউ কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না। তারা বলছেন, “বিদেশে থেকেও দেশের জন্য কিছু করার স্বপ্ন দেখত ও।”

 

একটি প্রাণ, একটি পরিবার, একটি স্বপ্ন—সব শেষ হয়ে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায়। সড়কে আরও একটি তাজা প্রাণ ঝরে গেল, রেখে গেল প্রশ্ন—এই মৃত্যুগুলো কি আর আমাদের নাড়া দেবে না?