মাটিতে—বাংলাদেশের জন্য কিছু করার প্রত্যয়ে।
আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) এক বিনিয়োগ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া তাঁর তথ্যসমৃদ্ধ ও মুগ্ধকর প্রেজেন্টেশন ভাইরাল হয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে। নিজের সাবলীল উপস্থাপনায় তিনি তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলো, বিনিয়োগবান্ধব নীতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। দেশের বাইরে বহুদিন কর্মরত থাকা এই তরুণ প্রশাসক ইতোমধ্যেই নানা মহলে প্রশংসিত হচ্ছেন তাঁর কাজ, ভাষা ও দৃষ্টিভঙ্গির জন্য।
আশিক চৌধুরী আগে সিঙ্গাপুরে এইচএসবিসি ব্যাংকের রিয়েল অ্যাসেট ফাইন্যান্স বিভাগের অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করতেন। সেখানে প্রতিষ্ঠিত ও সম্মানিত হলেও দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ তাঁকে ফিরিয়ে আনে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বরের এক প্রজ্ঞাপনে তাঁকে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায়। চলতি বছরের ৭ এপ্রিল তাঁকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া হয়।
ফেসবুক পোস্টে আশিক চৌধুরী নিজেই তাঁর ফিরে আসার গল্প জানিয়েছেন। লেখেন,
"প্রফেসর ইউনূস হঠাৎ ফোন করে বললেন, ‘আশিক, দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ পাওয়া গেছে। আসবা নাকি?’ আমি কোনো দ্বিধা ছাড়াই রাজি হয়ে যাই। ৫৯ সেকেন্ডের এক হোয়াটসঅ্যাপ কলে আমরা সিঙ্গাপুরের বিলাসী জীবন ছেড়ে বাংলাদেশের পথে রওনা দিলাম।”
নিজেকে তিনি বাংলাদেশের ‘চিফ মার্কেটিং অফিসার’ হিসেবে পরিচয় দেন মজা করে। বিডার দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি প্রতিদিন গড়ে ১৮ ঘণ্টা করে কাজ করছেন বলে জানান। দুই শতাধিক সিইও ও বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কথা বলে তিনি দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ আরও উন্নত করতে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন,
"আমরা জনগণের সরকার। প্রত্যাশা অনেক। সবাই চায় আমরা জিতি। কিন্তু একটু ভুল হলেই সমালোচনার মুখে পড়ি। তবু দলটা তো আমাদেরই। কাজ করেই যেতে হবে।"
আশিক চৌধুরী শুধু একজন দক্ষ ব্যাংকার নন, তিনি একজন স্কাইডাইভারও। দেশের পতাকা হাতে তিনি ৪১ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন—যা তাঁকে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ স্থান দিয়েছে। দেশের প্রতি ভালোবাসা তাঁর প্রতিটি কাজেই প্রকাশ পায়।
চাঁদপুরে জন্ম হলেও বাবার চাকরির সুবাদে আশিকের বেড়ে ওঠা যশোরে। শিক্ষাজীবন কেটেছে সিলেট ক্যাডেট কলেজে। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। কর্মজীবনের শুরু হয় দেশের একটি বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। পরে যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন এবং সেখান থেকেই তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের পথচলা শুরু।
সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখক, পেশাজীবী, সাধারণ মানুষ সবাই আশিক চৌধুরীর প্রশংসায় মুখর। লেখক গাজী মিজানুর রহমান ফেসবুকে লেখেন,
“কিছু লোক দেশপ্রেমের বুলি আওড়ায়, আর কিছু লোক তা প্রমাণ করে—আশিক চৌধুরী সেই দ্বিতীয় দলের মানুষ। সিঙ্গাপুরের আয়েশি জীবন ছেড়ে দেশের প্রয়োজনে যিনি ছুটে এসেছেন।”
বর্তমানে দেশের বিনিয়োগ খাতে নতুন উদ্যম ও আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছেন আশিক চৌধুরী। তাঁর মতো মানুষের আগমন দেশের জন্য নিঃসন্দেহে একটি আশার আলো। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা—এই উজ্জ্বল মেধাবী তরুণ দেশের জন্য কত বড় পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শেখ সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী, মোবাইলঃ 01712-823054
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।