
সারা দেশে গত দুই মাসে প্রতিদিন গড়ে ৬ জনের বেশি শিশু ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে, যা উদ্বেগজনক ও ভয়াবহ পরিস্থিতির ইঙ্গিত দেয়। শিশুর অধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো (এনজিও) এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
সম্প্রতি মাগুরায় মাত্র ৮ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ৬ মার্চ বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। এক সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত প্রাণ হারায় সে।
এই ঘটনায় শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ-অবরোধ করেছে। প্রতিবাদকারীরা শিশু ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
রোববার ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা জানায়—
✅ শিশুরা এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমনকি নিজ বাড়িতেও নিরাপদ নয়।
✅ শিশু সুরক্ষার জন্য আলাদা অধিদপ্তর গঠনের দাবি জানানো হয়।
✅ ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের সব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি ও অগ্রগতির তথ্য জনসাধারণের সামনে প্রকাশের আহ্বান করা হয়।
সেভ দ্য চিলড্রেনের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,
“শিশু সুরক্ষায় চাইল্ড ওয়েলফেয়ার বোর্ড ও ইউনিয়ন পরিষদে স্ট্যান্ডিং কমিটির কথা বলা হলেও সারাদেশের শিশু সুরক্ষার জন্য একটি পৃথক অধিদপ্তরের প্রয়োজন।”
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন,
“ধর্ষণের ঘটনায় ‘নারী নির্যাতন’ শব্দ ব্যবহার করলে যৌন নিপীড়নের বিষয়টি হালকা হয়ে যাবে। এটা একদমই মানা যায় না।”
সম্প্রতি ডিএমপি কমিশনার ধর্ষণ শব্দের পরিবর্তে ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নারী নিপীড়ন’ লেখার অনুরোধ জানান। এতে মানবাধিকার কর্মীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
তাদের মতে, ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে ভিন্ন নাম ব্যবহার করলে বিচারের পথ দুর্বল হয়ে পড়তে পারে এবং অপরাধীরা সহজেই পার পেয়ে যেতে পারে।
জনগণ চাচ্ছে
✔ শিশু ধর্ষণ বন্ধে কঠোর আইন ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা।
✔ শিশুদের জন্য আলাদা অধিদপ্তর গঠন করে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
✔ ধর্ষণের সব মামলার তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করে অপরাধীদের দ্রুত শাস্তি দেওয়া।
প্রশ্ন থেকেই যায়—সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কি এই ভয়াবহ পরিস্থিতি রোধে যথেষ্ট কঠোর হবে? নাকি শিশুদের প্রতি এই নির্মম সহিংসতা অব্যাহত থাকবে?