
সুশাসন ফেরাতে এবং আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে মেঘনা ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের (এনআরবিসি) পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ বুধবার তিন ব্যাংকে চিঠি দিয়ে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্র জানিয়েছে, এসব ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা এখনো স্থিতিশীল রয়েছে।
মেঘনা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এইচ এন আশিকুর রহমান। এ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা। বেশিরভাগ পরিচালক দেশের বাইরে থাকায় সুশাসন ব্যাহত হচ্ছিল। নতুন পরিচালক হিসেবে শেয়ারধারী উজমা চৌধুরী ও প্রতিনিধি পরিচালক তানভীর আহমেদকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন—
- বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মামুনুল হক ও রজব আলী
- যমুনা ব্যাংকের সাবেক এমডি নজরুল ইসলাম
- প্রাইম ব্যাংকের সাবেক অতিরিক্ত এমডি হাবিবুর রহমান
- হিসাববিদ আলি আকতার রিজভী
- ব্যাংকটি নতুন চেয়ারম্যান নিজেই নির্ধারণ করবে।
👉 এনআরবি ব্যাংকে পরিবর্তন
এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন আল হারামাইন পারফিউমের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান। সরকার বদলের পর তিনি ও বেশ কয়েকজন পরিচালক দেশে ফিরছেন না। নতুন চেয়ারম্যান করা হয়েছে ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ ওবিইকে।
স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন—
- গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ফেরদৌস আরা বেগম
- বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক শেখ মো. সেলিম
- মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক এমডি কামরুল ইসলাম চৌধুরী
- প্রাইম ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি শেখ মতিউর রহমান
- নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শরীফ নুরুল আহকাম
- হিসাববিদ মিজানুর রহমান
👉 এনআরবিসি ব্যাংকে পরিবর্তন
এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন রাশিয়া আওয়ামী লীগের নেতা এস এম পারভেজ তমাল। নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের (বিকেবি) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী হোসেন প্রধানিয়া।
👉 আগের পদক্ষেপ ও তদন্ত
এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১১ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়, যার মধ্যে সাতটি এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এসব ব্যাংকের মধ্যে ছয়টির সম্পদের মান যাচাই করছে আন্তর্জাতিক দুটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান— আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়াং ও কেপিএমজি।
👉 পর্ষদ ভেঙে দেওয়া ১১ ব্যাংক:
- ইসলামী ব্যাংক
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক
- সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক
- ইউনিয়ন ব্যাংক
- গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক
- বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক
- ন্যাশনাল ব্যাংক
- আল-আরাফাহ্ ব্যাংক
- আইএফআইসি ব্যাংক
- ইউসিবি ব্যাংক
- এক্সিম ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই পদক্ষেপকে দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার বড় উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।